ঐশীর ‘সুইসাইডাল নোট’ ও আমার সন্দেহ
- আশিস বিশ্বাস
ঐশীকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে- ছবি- বাংলানিউজ |
সংবাদমাধ্যমে
খবর বের হয়েছে, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (পলিটিক্যাল) ইন্সপেক্টর মাহফুজুর
রহমানের মেয়ে ঐশী (১৬) বাবা-মাকে খুনের পরিকল্পনার আগে সে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিল।
এ জন্য সে তার স্কুলের খাতায় ১২ পৃষ্ঠার সুইসাইডাল নোট লিখেছিল।
নোটের
বক্তব্য বাংলানিউজ থেকে তুলে ধরছি। কিন্তু আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে, নোটটা আসলেই
ঐশীর কিনা। আমার জানা মতে, ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের ছেলে-মেয়েরা বাংলা ভাষার চেয়ে
ইংরেজি ভালো বোঝে ও লিখতে পারে। কিন্তু যে নোটটি দেখতে পারছি, তাতে বলা চলে
নির্ভুল বাংলায় লেখা ও সেই সঙ্গে আবেগ প্রকাশের ধরন যাদের বাংলা ভাষায় ভালো দখল
আছে, সেই রকমই লেগেছে। আমার সন্দেহটা এখানেই।
আদালতে ঐশী- ছবি- বাংলানিউজ |
ইংলিশ মিডিয়ামের শিক্ষার্থীরা
সাধারণত ইংরেজিতে কথা বলে। বাংলা বললেও তাদের শব্দ ভাণ্ডার কম। তাহলে নিখুঁতভাবে
ঐশী এই নোটটি লিখলো। কেন সে ইংরেজিতে লিখলো না ? আর যে খবরা-খবর পাওয়া গেছে, সে
হিসাবে ঐশীর মনের কথা শেয়ার করার মতো বন্ধু বা বান্ধবী কম থাকার কথা নয়। এ সব
সন্দেহ কিন্তু আমার থেকেই গেল!!! ও হ্যাঁ, যেখানে তদন্ত শেষ হয়নি, সেখানে ডিবি
পুলিশ এই নোট মিডিয়ার কাছে দেবে, ভাবতেই যেন অবাক লাগছে ও সন্দেহটা আরো গভীর হচ্ছে।
হত্যার কারণ
হিসেবে আপাতত জানা গেছে, মনস্ত্বাত্তিক ও মনো-সামাজিক এবং দুই প্রজন্মের
সংস্কৃতিগত পার্থক্য অনুধাবন করতে না পারা।
দেখা যাক,
নোটে কী পাওয়া গেল- ঐশী লিখেছে-
খুনের আগে সুইসাইডাল নোট লিখেছিল ঐশী
19 Aug 2013 01:38:51 AM Monday
BdST
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আদালত থেকে ফেরার পথে- ছবি- বাংলানিউজ |
ঢাকা: মা-বাবাকে হত্যার আগে
আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ঐশী। তাই তার পড়ার খাতার ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে লিখেছিল
সুইসাইডাল নোট! খাতাটি এখন গোয়েন্দার হাতে।
সেখানেই পাওয়া গেছে ঐশীর আত্মহত্যার ইচ্ছা আর বাবা-মায়ের ওপর ক্ষোভের কারণ। তবে চিঠিটি সে নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখেনি। লেখার আগে সে ভেবেছে নিশ্চয়ই কেউ এটি পড়বে।
দুই বছর আগে খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে মিশে বখে যায় ঐশী। কিন্তু তার বাবা-মা বিষয়টা বুঝতে পারেন মাস তিনি মাস আগে। সেই থেকে বাসার বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে বার, ড্যান্সপার্টি, ডিজে পার্টি থেকে এমন কোনো কাজ ছিল না যার সঙ্গে তার সম্পৃক্তা নেই। ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন নেশায় আসক্ত থাকতো সে।
পড়াশোনার চাইতে ঐশীর কাছে এগুলোর প্রধান্যই ছিল বেশি। মূলত অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর ক্লাস এইট থেকে তার অন্ধকার জগতে পা দেওয়া শুরু হয়। স্কুলের বন্ধুদের হাত ধরেই এই পথে পা বাড়ায় ঐশী।
এক সময় ডিজে পার্টির নিয়মিত ড্যান্সারে পরিণত হয়। ঐশীর সঙ্গে আটক মিজানুর রহমান রনি ছিল ঐশীর ড্যান্স পার্টনার। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে তার ছিল তার অবাধ যাতায়াত।
আর বাবা-মা বেঁচে থাকলে স্বাধীনভাবে এসবের কোনো কিছুই করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই সে তাদের চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাবা-মাকে হত্যার আগেই `সুইসাইডাল` নোট লেখে ঐশী। স্কুলের খাতার ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে লেখা সেই নোটে উঠে এসেছে তার মনের একান্ত কিছু কথা। সে বলেছে, তার বাবা-মা তাকে বোঝার চেষ্টা করেনি কখনো। তারা দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করেছে কিন্তু ভালো দিকগুলো দেখার চেষ্টা করেনি কখনো। `সুইসাইডাল` নোটে ঐশী লিখেছে-
সেখানেই পাওয়া গেছে ঐশীর আত্মহত্যার ইচ্ছা আর বাবা-মায়ের ওপর ক্ষোভের কারণ। তবে চিঠিটি সে নির্দিষ্ট কাউকে উদ্দেশ্য করে লেখেনি। লেখার আগে সে ভেবেছে নিশ্চয়ই কেউ এটি পড়বে।
দুই বছর আগে খারাপ বন্ধুদের সঙ্গে মিশে বখে যায় ঐশী। কিন্তু তার বাবা-মা বিষয়টা বুঝতে পারেন মাস তিনি মাস আগে। সেই থেকে বাসার বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে বার, ড্যান্সপার্টি, ডিজে পার্টি থেকে এমন কোনো কাজ ছিল না যার সঙ্গে তার সম্পৃক্তা নেই। ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন নেশায় আসক্ত থাকতো সে।
পড়াশোনার চাইতে ঐশীর কাছে এগুলোর প্রধান্যই ছিল বেশি। মূলত অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর ক্লাস এইট থেকে তার অন্ধকার জগতে পা দেওয়া শুরু হয়। স্কুলের বন্ধুদের হাত ধরেই এই পথে পা বাড়ায় ঐশী।
এক সময় ডিজে পার্টির নিয়মিত ড্যান্সারে পরিণত হয়। ঐশীর সঙ্গে আটক মিজানুর রহমান রনি ছিল ঐশীর ড্যান্স পার্টনার। রাজধানীর বিভিন্ন হোটেলে তার ছিল তার অবাধ যাতায়াত।
আর বাবা-মা বেঁচে থাকলে স্বাধীনভাবে এসবের কোনো কিছুই করা তার পক্ষে সম্ভব হবে না। তাই সে তাদের চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বাবা-মাকে হত্যার আগেই `সুইসাইডাল` নোট লেখে ঐশী। স্কুলের খাতার ১২ পৃষ্ঠা জুড়ে লেখা সেই নোটে উঠে এসেছে তার মনের একান্ত কিছু কথা। সে বলেছে, তার বাবা-মা তাকে বোঝার চেষ্টা করেনি কখনো। তারা দোষ-ত্রুটি খুঁজে বের করেছে কিন্তু ভালো দিকগুলো দেখার চেষ্টা করেনি কখনো। `সুইসাইডাল` নোটে ঐশী লিখেছে-
ক্লান্ত-অবসাদগ্রস্ত ঐশী- ছবি- বাংলানিউজ |
প্রিয়,
আমি জানি না এই চিঠি আমি কাকে লিখছি। তারপরও কাউকে না কাউকে কিছু একটা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। আমি আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর আরও কঠিন মনে হচ্ছে। বুক ভেঙে যাচ্ছে। আত্মহত্যার কারণ আমি কাউকে বলতে চাইছি না। একজনের দুঃখ সাধারণত আরেকজন কখনোই মন থেকে বুঝতে পারে না। আমার আত্মহত্যার কারণ তোমার কাছে খুবই অপ্রয়োজনীয় ও হাস্যকর মনে হতে পারে। সুতরাং সেই ঝামেলায় গেলাম না। আমার এই চিঠিটাকে সুইসাইডাল নোট বলা যেতে পারে। তুমি নিশ্চয় অবাক হচ্ছো, জীবনের শেষ কথাগুলো আমার আত্মীয়-স্বজন, বাবা-মাকে না জানিয়ে কোনো অপরিচিত কাউকে কেন জানাচ্ছি! তারা কোনোদিনও আমাকে বুঝতে পারেনি।
আমার অনেক খারাপ দিক আছে- সেই খারাপ দিকগুলো চালাকি করে বুঝে ফেলা ছাড়া ভালো দিকগুলো কখনোই তারা বোঝার চেষ্টা করেছে কি-না সন্দেহ!
আমার এই চিঠিটি তাদের দেখাতে লজ্জা এবং ঘৃণা লাগে। কারও প্রতি আমার কোনো রাগ নেই। মানুষকে দোষ দিয়ে কী লাভ বলো! প্রত্যেকেরই তো নিজস্ব চিন্তাধারা, আশা থাকে। প্রত্যেকেই চায় তার ইচ্ছা পূরণ হোক। শুধু যেটা বুঝতে পারে না অন্য মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে। আনন্দের একটি নির্দিষ্ট কারণও থাকতে পারে।
আমি জানি, তারা আমাকে অনেক ভালোবাসে। তাদের ভালোবাসা নিয়ে প্রশ্ন তোলার বা দোষ ধরার ইচ্ছা, রাগ, শক্তি কোনোটাই আমার এখন আর নেই। শুধু একটাই আফসোস থেকে গেল- জীবনে অনেক স্বপ্ন ছিলো কোনোটাই পূরণ করতে পারলাম না। এ পৃথিবীর মানুষ সবাইকে বুকের মাঝে নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলাম সবই কেমন যেন ধুয়ে-মুছে গেল, সব শেষ। আচ্ছা সব কিছু এমন হয়ে গেল কেন, বলোতো?
ভাইয়া/আপু
আমিতো মানুষকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম! পৃথিবীকে ভালোবাসতে চেয়েছিলাম! মানুষের হাসি-কান্না, আনন্দ ভালো লাগা, অনুভূতি, প্রেম, সবচেয়ে বড় কথা- মানুষকে ভালোবাসা। পৃথিবীর নানা জায়গার সৃষ্টি এতো সুন্দর যে বেহেস্তকেও যেন হার মানায়। কেন শেষ পর্যন্ত এখানে বাস করে যেতে পারলাম না! কেন এসব উপভোগ করে যেতে পারলাম না শেষ সময় পর্যন্ত!
মিডিয়ার সামনে ছবি তুলতে ঐশীর মুখটি তুলে ধরা হয়- ছবি- বাংলানিউজ |
আমি জানি, এর উত্তর একমাত্র ঈশ্বর ছাড়া আর কারো কাছে নেই। হয়তো বা ঈশ্বরের কাছেও নেই! আমি সবসময় শুনে আসছি, তুমি যদি মন দিয়ে কোনো কিছু চেয়ে থাকো তবে অবশ্যই তা পাবে। আমার স্বপ্ন আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলো আমি কী মন দিয়ে চাইনি! শুধু মন দিয়ে চাওয়া এই স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য কত কষ্টই না করলাম। মানসিকভাবে, শারীরিকভাবে।
শারীরিক কষ্টটা হয়তো অন্যের দৃষ্টিতে এত বেশি হবে না। আমার জন্য তা অনেক ছিলো। আহ, ওহ, মানসিক কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আমার হাত কাঁপছে। একটা সময় ছিলো, এমন কোনোদিন যেত না যে আমি কাঁদতাম না। জীবনের দুইটা বছর নষ্ট হয়ে গেল। দুইটা বছর একা একা কাটালাম। এ দুইটা বছর যে কিসের ভেতর দিয়ে গিয়েছি, আমি আর ঈশ্বর ছাড়া আর কেউ জানে না। হাজার কষ্টের মধ্যেও একটা জিনিস চিন্তা করে স্বস্তি পেতাম।
অন্তত আর কেউ না থাকুক ঈশ্বর আমার পাশে থাকবে। আর কেউ না বুঝুক, উনি আমার কষ্টটা বুঝবেন। আমি এখনও জানি তিনি আমার পাশে আছেন। যা হোক এসব কথাবার্তা
বলা এখন অর্থহীন। মনের ভেতর এক অজানা উল্লাস হচ্ছে। কেন জানি মনে হচ্ছে, মৃত্যুর পর আমার পছন্দের জায়গায় চলে যাব। জায়গাটা পৃথিবীর মতোই হবে। কিন্তু এই পৃথিবীতে আমার স্বপ্নগুলো এখনো পূরণ হয়নি। যেগুলো পূরণ করতে হবে। মানুষ কেমন আজব প্রাণী তাই না! আশা (হোপ) মানুষ ছাড়তে পারে না। মরতেও চাই আশা নিয়ে। আমি জানি না মৃত্যুর পর কী হবে! দেখা যাক কী হয়! আসলে মৃত্যুর পরের জীবন বলতে হয়তো কিছুই নেই!
শুধুই মাটির সঙ্গে মিশে যাবো। তাহলে তো সবই শেষ। যা হোক, মৃত্যুর পর যদি কিছু নাও পাই, এই পৃথিবীতে যতটুকু সময় কাটিয়েছি, আমার এ ছোট্ট জীবন, তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। তুমি হয়তো বা মনে করতে পারো, এ পৃথিবীতে এসে তো কিছুদিন পর আত্মহত্যাই করলাম। সময় নিশ্চয় ইহকালে ভালো কাটেনি, তাহলে কৃতজ্ঞ হওয়ার কী আছে? ন্যাকামির আর জায়গা পাই না! কি জানি!
ভাইয়া/আপু,
কেন জানি ভালো লাগে। পৃথিবীতে এসে অনেক কষ্ট পেয়েছি ঠিকই, সবচেয়ে বড় কষ্টটা হলো আশা শেষ হয়ে যাওয়ার কষ্ট। তীব্র হতাশা মাথার ওপর ভেঙে পড়ার কষ্ট। মানুষ কি আশা ছাড়া বাঁচতে পারে বলো, এই একটা জিনিসই তো আছে! যা কি-না বহুদিন পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে রাখা যায়। কিন্তু আমি যদি বলি পৃথিবীতে আমার জীবনের সময়গুলোতে কোনো সুখ স্মৃতি নেই- তাহলে তো মিথ্যা বলা হবে। কত ভালো, কত আনন্দ, কত কি-ই না আছে! কত সুন্দর মানুষের হাসি, সেই সুখগুলো, কোনো ছেলেকে প্রথম ভালো লাগা- সেই অনুভূতিগুলো।
পছন্দের আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার সেই সময়গুলো, পৃথিবীর ইতিহাস পড়ে, সুন্দর জায়গার দৃশ্য দেখে অভিভূত হওয়ার সময়গুলো....কত কি-ই না আবিষ্কার করলাম! পৃথিবীর ব্যাপারে, মানুষের জীবনের ব্যাপারে। মানুষের জীবন সম্বন্ধে কত সুন্দর সুন্দর তথ্যই না জানলাম। এর থেকে সুন্দর জিনিস আর কি-ই বা হতে পারে! মানুষের তৈরি কত অদ্ভুত-চমত্কার জিনিসই না দেখার সৌভাগ্য হলো।
ঈশ্বরের বিশাল ও তুলনাহীন সৃষ্টি দেখতে পারলাম। এই জায়গাটায় না আসলে এসব কীভাবে জানতাম! কীভাবে দেখতাম! মরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এখন সবকিছুই সহজ মনে হচ্ছে। এক ধরনের স্বস্তি বোধ করছি। সবচেয় বেশি স্বস্তি বোধ করছি জীবন যুদ্ধ আর আমাকে করতে হবে না।
সব ক্লান্তি যেন ভর করে ঔশীর ওপর- ছবি- বাংলানিউজ |
জীবনযুদ্ধে হেরে গেলাম এই কথাটা আগে শুধু বইতে পড়তাম। তখন অনুভব করতে পারিনি, এখন বুঝতে পারছি জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া আসলে কী জিনিস। আমি সব সময় শুনে এসেছি, যারা আত্মহত্যা করে তারা নাকি দোজখে যায়। জিনিসটা কেন জানি বিশ্বাস করতে পারি না। কারণ যে মানুষটা এখন স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে, তার ভেতরে কী পরিমাণ হতাশা, কষ্ট, দুঃখ থাকলেই না জানি সে এমন একটা কিছু করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে! এই জায়গাটাকে আমরা কতই না ভালোবাসি।
হাজার কষ্টের মধ্যেও লড়াই করে যাই শুধুমাত্র এই জায়গাটাতে টিকে থাকার জন্য, একটু সুখে থাকার জন্য। একটা মানুষের বুক কতটা ভেঙে গেলে এই ধরনের, এই সাধের জীবন, পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারে! তার বুক ভাঙা কষ্টের কি কোনো দাম নেই। পৃথিবীর যেখানে আমরা এক টুকরো সুখের জন্য কত কিছুই না করি, এত কষ্ট পাওয়ার পরও। ঈশ্বর কী এতোটাই পাষাণ! কি দোষ করেছিলাম আমি। জীবনের কথা না হয় বাদই দিলাম।
আমি এমনকি খারাপ কাজ করেছিলাম যে, কোনো কিছুই সত্যি হতে দেখলাম না। মাঝখান দিয়ে জীবনে আরো যে যুদ্ধ করে যাব সেই উপায়টাও শেষ হয়ে গেল। ঈশ্বর বুঝি আসলেই পাষাণ।
লেখার মতো আরো অনেক কিছুই আছে। কিন্তু আর কিছুই লিখতে পারছি না। জ্বরের জন্য হাত কাঁপছে। শরীর জ্বলন্ত আগুনের মতো গরম। চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসছে। এখন যে কেউ একজন গায়ে হাত রাখবে এমন কেউ নাই। থেকেও যেন নাই। এই কথাটা সত্যি- মানুষ পৃথিবীতে আসে একা, চলেও যায় একা। হায়রে পৃথিবী! কত ভালোবাসার, কত সাধের! আমি ভাববো এক সময় পৃথিবী নামে আমার পরিচিত একটা ছেলে ছিলো!
বাংলাদেশ সময়: ০১২৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৩
আইএ/পিসি/জিসিপি
No comments:
Post a Comment