রাহনুমা সারাহ্ এক অজানা গন্তব্যের পথিক!
রাহনুমা সারাহ্। একজন মানবহিতৈষী
মানুষ। নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান; পুঁজিবাদী সমাজে যা আশাই করা যায় না।
কার কার রক্ত লাগবে, কোথায় মুমূর্ষ
রোগী হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, তার খোঁজ রাহনুমা সারাহ্র কাছে পাওয়া যায়। তার
মানবিকবোধ অত্যন্ত তীব্র। বলা হয়, যিনি যত বেশি সেনসেটিভ (Sensitive), তার
মনে তত বেশি কষ্ট। রাহনুমা সারাহ্ তাদেরই একজন। এই ঢাকা শহরে একই ফ্লোরে অন্য
ইউনিটে কে থাকেন, কী করেন, তাই-ই যখন জানা হয় না, তখন সারাহ্ দেশ চষে বেড়ান অসহায়
মানুষদের খুঁজতে। কখনো একা, কখনো দল বেঁধে। তবে একান্তই নিজের মতো করে। কোনো
প্রচারের উদ্দেশ্যে নয়, একান্তই মনের তাগিদে।
তিনি একজন শিল্পীও। শিল্পীর মনের
একান্তে অনেক কষ্ট, না পাওয়ার বেদনা থাকে। তা আমরা কখনো কেঁদে, কখনো বিষণ্ন
থেকে, কখনোবা মানুষ থেকে দূরে চলে গিয়ে লুকিয়ে রাখি। কিন্তু মনে বাজতে থাকে
বেহালার করুণ সুর। রাহনুমা সারাহ্ সতি্যই মনে মনে অনুভব করেন বেহালার করুণ সুর।
সে কারণেই হয়ত তিনি বেহালা বাজান। একান্তই নিজের জন্য।
মনের ভেতর জমে থাকা কষ্ট, যন্ত্রণা,
ইচ্ছেগুলো তার ফুটে উঠেছে, তার লেখা ছোট গল্পে। নিজের কথাগুলো সামাজিক
গণমাধ্যমে তুলে ধরেছেন কখনোবা মনে ধারণ করেছেন। তিনি ব্লগও লেখেন।
তার অনুভূতির কথা গল্প আকারে লিখেছেন
অথচ খুবই অল্প কথায়। এত অল্প কথায় মনের নিংড়ানো কথাগুলো, অনুভূতি, ইচ্ছে কত সহজে
তুলে ধরা যায়, কিন্তু এত প্রাঞ্জল আর বাঙময় করে, তা রাহনুমা সারাহ্র লেখাগুলো
পড়লে যে কেউই অনুভব করতে পারবেন। গল্পগুলো পড়তে পড়তে মনে হবে, আমিই বুঝি সেই
চরিত্র। আর তখনই ভালোলাগা, মনের উদাসীনতা ভর করবে মনে। তার ছোট্ট তিনটি গল্প আমি
আমার বন্ধুদের উদ্দেশে নিবেদন করছি-
ধন্যবাদান্তে-
আশিস বিশ্বাস
১.
- হাতটা ধরে হাঁটবি!
- কেন? তুই কি চোখে দেখছিস না কিছু?
- চোখে না দেখতে পেলেই বুঝি হাত ধরে হাঁটতে হয়!
- না মানে... আমি জানতাম না তুই অন্ধ!! আহারে বেচারি!!
- মানে কী?
- মানে কী?
- সামনে কোন বোর্ড এক্সাম থাকলে প্রতিবন্ধী কোটার ঘরটা দয়া করে পূরণ করিস!!
- তোর সমস্যা কী? তুই কি জীবনে কখনোই সিরিয়াস হতে পারিস না! নাকি অযথাই অবহেলা করিস!! আমার তোর হাত ধরে হাঁটতে ইচ্ছে হচ্ছিল ব্যাস... এই তো!!
- আচ্ছা বাবা ঠিক আছে... হাতটা দে...
- নাহ্
- দে না... ঠিক আছে... এই দ্যাখ কান ধরেছি...
- নাহ্
- কী করবো? উঠবস করবো? তাহলে তো লোকে ভাববে এখানে ইতিহাসের ক্লাস চলছে... আর চারদিকে ভিড় জমে যাবে!!
- তোর সাথে আমার ইতিহাস নেই কোনো...
- তাহলে কেমিস্ট্রি??
- প্রশ্নই ওঠে না...
- নিশ্চয়ই তুই বলবি না সাহিত্য!! সাহিত্যের কথা ভাবলেই আমার ঘুম পেয়ে যায়!! ঘরররর!!
- আমি গেলাম...
- কতদূর?
- কতদূর মানে!
- মানে... আমি বলছিলাম যে, এ দিকটা তো তুই ঠিকভাবে চিনিস না... তাহলে কতদূর যেতে পারবি?
- যতদূর যাওয়া যায়... তোর কী তাতে! হারালে আমি হারাবো, তোর তো কিছু যায় আসে না...
- সত্যিই হারাতে চাস??
- হুম...
- তুই কি জানিস, তোর হাত ধরি আর না ধরি, তুই আমার কাছ থেকে কখনোই হারাতে পারবি না!!
- কচু!!
- প্রমাণ চাস?
- প্রমাণ চাস?
- দে...
- তাহলে হাতটা ছেড়ে যা দেখি একবার...!!
- ওমা!! তুই আমার হাত ধরেছিস কখন?
- অনেকক্ষণই তো হলো... টের পাস নি?
- না তো!!!
- জিজ্ঞাসা করবার প্রয়োজন মনে করিনি... কারণ আমি জানি, এ দুটো হাত কেবলই আমার...
অতঃপর...
হাতে হাত রেখেই কাটিয়ে দেয়া অনেকটা সময়... শুধু দুজনে...
- তাহলে হাতটা ছেড়ে যা দেখি একবার...!!
- ওমা!! তুই আমার হাত ধরেছিস কখন?
- অনেকক্ষণই তো হলো... টের পাস নি?
- না তো!!!
- জিজ্ঞাসা করবার প্রয়োজন মনে করিনি... কারণ আমি জানি, এ দুটো হাত কেবলই আমার...
অতঃপর...
হাতে হাত রেখেই কাটিয়ে দেয়া অনেকটা সময়... শুধু দুজনে...
০৯ মার্চ ২০১৪
২.
-জানিস, মাঝে মাঝে দূরে কোথাও চলে যেতে ইচ্ছে হয়!!
: কোথায়?
- জানি না... হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে...
: কোথায়?
- আরে বুদ্ধু!! কোথায় হারাবো, তা জানা থাকলে হারাবো কীভাবে?
: ওহ আচ্ছা...!! তাহলে তোকে আমার পকেটে রেখে দিই কি বলিস? পকেটে রাখলে অন্ততপক্ষে পকেট মারিং হবার একটা চান্স থাকে। তাতে একটা সুবিধাও আছে। তোর তাহলে হারাবার বিষয়টা নিয়ে খুব একটা ভাবা লাগবে না। আর তা ছাড়া আমার পকেট সম্পর্কে তো তুই জানিসই... প্রায়ই মারিং হয়। সো, তোর হারিয়ে যাওয়া কনফার্ম...
- তোর মাথা আমার মুণ্ডু... তোকে বলাটাই আমার ভুল হয়েছে। কোনোদিনই তুই একটু সিরিয়াস হতে পারিস না! থাক, আমি আর কিছুই বলবো না তোকে...
: আরে! রাগ করছিস কেন! আমি তো একটু দুষ্টুমিই করছি!! এভাবে ক্ষেপে গেলে চলে!!
- নাহ্... খেপবো না... আনন্দে নাচবো!!
: আচ্ছা ঠিক আছে। তোর হারাবার ব্যবস্থা আমি করছি।
: কোথায়?
- আরে বুদ্ধু!! কোথায় হারাবো, তা জানা থাকলে হারাবো কীভাবে?
: ওহ আচ্ছা...!! তাহলে তোকে আমার পকেটে রেখে দিই কি বলিস? পকেটে রাখলে অন্ততপক্ষে পকেট মারিং হবার একটা চান্স থাকে। তাতে একটা সুবিধাও আছে। তোর তাহলে হারাবার বিষয়টা নিয়ে খুব একটা ভাবা লাগবে না। আর তা ছাড়া আমার পকেট সম্পর্কে তো তুই জানিসই... প্রায়ই মারিং হয়। সো, তোর হারিয়ে যাওয়া কনফার্ম...
- তোর মাথা আমার মুণ্ডু... তোকে বলাটাই আমার ভুল হয়েছে। কোনোদিনই তুই একটু সিরিয়াস হতে পারিস না! থাক, আমি আর কিছুই বলবো না তোকে...
: আরে! রাগ করছিস কেন! আমি তো একটু দুষ্টুমিই করছি!! এভাবে ক্ষেপে গেলে চলে!!
- নাহ্... খেপবো না... আনন্দে নাচবো!!
: আচ্ছা ঠিক আছে। তোর হারাবার ব্যবস্থা আমি করছি।
- থাক... লাগবে না...
: তোকে কিডন্যাপ করাই কী বলিস!
: তোকে কিডন্যাপ করাই কী বলিস!
- ধ্যাৎ!!
: তাহলে তুলে আনি...!!
: তাহলে তুলে আনি...!!
- তুই চোখের সামনে থেকে দূর হ তো...
: আচ্ছা! এক কাজ করি... দুজন বাসা থেকে পারমিশন নিয়ে পালিয়ে যাই কী বলিস?
: আচ্ছা! এক কাজ করি... দুজন বাসা থেকে পারমিশন নিয়ে পালিয়ে যাই কী বলিস?
- অন্য কাউকে নিয়ে পালা... আমি নেই!!
: ভালোবাসিস?
: ভালোবাসিস?
- হু
- কীভাবে??
: এটা হচ্ছে তোকে নিয়ে পালাবার ভিসা!!
- ইস!! বলেছে তোকে...!!
: দ্যাখ, তুই আমাকে ভালোবাসিস আমিও তোকে... কাপুরুষের মতন পালাতে হবে না আমাদের...
সবার অনুমতি নিয়েই আমরা শুরু করবো আমাদের নতুন জীবন... হারিয়ে গিয়েও নতুন করে দুজন খুঁজে পাবো দুজনকে... ‘ভালোবাসা’ হবে আমাদের অনুমতি, ‘বিশ্বাস’ হবে বাহন আর ‘সম্পর্ক’ আমাদের ম্যাপ...!! সুতরাং, এ তিনটির ওপর চোখ বুজে ভরসা করে বেড়িয়ে পড়বো দুজনে... কি যাবি না?
ছলছল করে উঠলো অনুর চোখ...
মনে মনে ভাবছে- এই ছেলেটির ওপর চোখ বন্ধ করে ভরসা করা যায়...
হারিয়ে যাবে সে...
আপাতত, অপেক্ষায় থাকবে হারানোর...
ভালোবেসে হারানোর... ভালোবাসায় হারানোর...
১১ মার্চ ২০১৪
৩.
- তুই এখানে কী করছিস??
- কিরে!! চমকে দিলাম তো!!
- তা আবার দিস নি!! কিন্তু, তুই এখানে কী করছিস??
- আসলে তোকে সারপ্রাইজ করবার কোনো উদ্দেশ্য আমার ছিল না। জাস্ট মন চাইলো, চলে এলাম! তবে তুই এতটা চমকেছিস কেন, সেটাই ভাবছি...
- ওমা!! চমকাবো না!! বলা নেই, কওয়া নেই, কোথা থেকে হুট করে আবির্ভূত হলি!!
- তা আবার দিস নি!! কিন্তু, তুই এখানে কী করছিস??
- আসলে তোকে সারপ্রাইজ করবার কোনো উদ্দেশ্য আমার ছিল না। জাস্ট মন চাইলো, চলে এলাম! তবে তুই এতটা চমকেছিস কেন, সেটাই ভাবছি...
- ওমা!! চমকাবো না!! বলা নেই, কওয়া নেই, কোথা থেকে হুট করে আবির্ভূত হলি!!
- আচ্ছা, তারমানে তুই আমাকে এক্সপেক্ট করিস নি!!
- না...
- এটাই আসলে রহস্য...
- কী রকম?
- কী রকম?
- তুই আসলে আমাকে এক্সপেক্ট করিস না কখনও...
- না... তা না আসলে... মানে...
- না... তা না আসলে... মানে...
- আর কিছু বলতে হবে না অনু... আমি বুঝে গেছি...
- কি বুঝলি বুদ্ধু??
- কি বুঝলি বুদ্ধু??
- বুঝলাম যে, তোকে সারপ্রাইজ করা আসলেই অনেক সহজ...
- হুম...
- কেউ যখন কাউকে এক্সপেক্ট করে না, তখন তাকে মুহূর্তেই সারপ্রাইজ করা যায়... এখন যেমন আমি তোকে করলাম... এই ঘটনাটি আসলে সারপ্রাইজ নয়, এটি কেবলমাত্র একটি সুন্দর মুহূর্ত... সারপ্রাইজের অর্থ আরো গভীর... এতে ডেডিকেশন লাগে, লাগে চমক... এটা স্পেশাল হয়...
-মুহূর্তটি স্পেশাল আমার জন্য অভি...
- কেউ যখন কাউকে এক্সপেক্ট করে না, তখন তাকে মুহূর্তেই সারপ্রাইজ করা যায়... এখন যেমন আমি তোকে করলাম... এই ঘটনাটি আসলে সারপ্রাইজ নয়, এটি কেবলমাত্র একটি সুন্দর মুহূর্ত... সারপ্রাইজের অর্থ আরো গভীর... এতে ডেডিকেশন লাগে, লাগে চমক... এটা স্পেশাল হয়...
-মুহূর্তটি স্পেশাল আমার জন্য অভি...
-দ্যাখ, খুব সহজে কিছু করা গেলে সেটির মূল্য বেশিদিন টেকে না... কষ্টার্জিত জিনিস বেশিদিন টেকে... তোকে সারপ্রাইজ করবার জন্য আমি আরো খাটুনি করতে চাই, আরো ডেডিকেশন দিতে চাই।
- আরে, আজকের দিনটির মূল্য সত্যিই থাকবে আমার কাছে...
- আমি কথা দিচ্ছি... আজকের মতন আরো অনেক মুহূর্ত আমি তোকে দেবো... তুই শুধু আমাকে অবহেলা করিস না... অবহেলা সহ্য হয় না আমার... একেবারেই না...
আমি তোকে যত্নে রাখবো... খুব যত্নে... অবহেলায় অনাদরে অনেক দামি জিনিসও নষ্ট হয়ে যায়... তুই আমার কাছে দামির চেয়েও দামি...
অনেক বেশি দামি...
১২ মার্চ ২০১৪
3 comments:
Really she deserve it.........
Great salute & i really appreciate from my heart to her Humanity.........
God bless him......
salute & i really appreciate from my heart to her Humanity.........
God bless him......
Post a Comment