Tuesday, April 29, 2014

উত্তম-সুচিত্রার যদি বিয়ে হত




 

আমার চোখ




 উত্তম-সুচিত্রার যদি বিয়ে হত


মাধবী মুখোপাধ্যায়
 



আজ আমার প্রথম ব্লগ নিয়ে কথা বলা! সবটাই স্মৃতি হাতড়ে ফিরে দেখা

তাই সময় ধরে নয়, আজ আমার শুরুর দিকের টলিপাড়ার না-দেখা সুচিত্রা সেন আর সহকর্মী উত্তম কুমারের স্মৃতির ইশারা আমার চোখ ভরিয়ে দিচ্ছে
সুচিত্রা সেনকে আমি কোনওদিন দেখিনিআর দেখার ইচ্ছেও আমার কোনওদিন হয়নি যে মানুষ নিজে থেকেই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে সরে গেলেন, থেমে গেলেন তাঁকে যেচে দেখতে চাইব কেন?

সুচিত্রা সেন-এর মেক আপ আর্টিস্ট শৈলেন গঙ্গোপাধ্যায় আর পরিচালক অসিত চৌধুরির কাছ থেকেই আমার সুচিত্রা সেন সম্পর্কে জানাশৈলেন গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে শুনেছি মেক-আপ রুমে কাউকে ঢুকতে দিতেন না সুচিত্রা সেনরোদ বা বৃষ্টিতে স্টুডিও পাড়ায় উনিই তখনকার দিনের একমাত্র নায়িকা,যাঁর মাথায় ছাতা ধরার লোকও আলাদা ছিলআমি মনে করি তাঁর ডমিনেট করার জোর তাঁর ঐশ্বরিক ক্ষমতা থেকেই এসেছিলনিশ্চই তাঁর জীবনে কোনও যন্ত্রণা ছিলএবং সেই যন্ত্রণা থেকেই উনি ওই ঐশ্বরিক ক্ষমতা লাভ করেছিলেনওঁর সমতুল্য কোনও মানুষ ছাড়া সাধারণ মানুষের সঙ্গে উনি মেশেননিওঁর এই ধারাকে আমি আমার জীবনে নিতে চেষ্টা করেছিআমারও মনে হয়, আমার থেকে উঁচু স্তরের মানুষের সঙ্গে না মিশলে তো আমার চরিত্রের কোনও উত্তরণ হবে নাআর আমিও কিছু সেখান থেকে আরোহণ করার উৎসাহ পাব না

আজকের দিনে আরও একটা কথা খুব মনে হয়, সুচিত্রা সেন কোনওদিন স্তাবকতা পছন্দ করতেন নাআমি নায়িকা, আমার চারিদিক দর্শকের মুগ্ধতায় মুখরিত হবে এ তিনি ঘুণাক্ষরেও চাননিআমিও এই ধারাকে অনুসরণ করিআমারও কোনও স্তাবক নেই

এই লোক দেখানো গ্ল্যামারের আলো থেকে বেরিয়ে আসার প্রসঙ্গে আরও একটা কথা আজ মনে পড়ছেঅসিত চৌধুরি তখনকার অভিনয় জগতের নাম করা একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেনসকলেই, বিশেষ করে সব নায়িকারাই তখন চাইত উনি যাতে সুচিত্রা সেন-এর কাছে না যানসকলেই চাইত অসিত চৌধুরি আমার কাছে, আমার হয়ে থাকুনকিন্তু আমি ওঁকে বলতাম, আপনি যান সুচিত্রা সেন-এর কাছেওঁর সঙ্গে গল্প করুনআমার মনে আছে উনি যখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোম-এ, আমি ওঁকে, মানে অসিত চৌধুরিকে দেখতে গেছিতখন আমাকে দেখেই প্রথমে উনি বললেন, ‘এসেছিল! মাথায় জপ করে দিয়ে গেছেমানে উনি বলতে চাইলেন সুচিত্রা সেন এসে মাথায় জপ করে দিয়ে গেছেনঅদ্ভুত একটা কঠিনে কোমলে গড়া ছিল সুচিত্রার মন

শৈলেন গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে আমার শোনা, পরিচালক নীরেন লাহিড়ি সুচিত্রা সেন-এর অভিনয় জীবনের প্রথম দিকে সুচিত্রা সেনকে প্রপোজ করেছিলেন সুচিত্রা সেন সেটা অ্যাক্সেপ্ট তো করেননি, উল্টে সেখান থেকে চলে আসেনআর ফিরে যাননিতখন নীরেন গাঙ্গুলি সুচিত্রা সেনকে বলেছিলেন, ‘তুমি যদি কোনওদিন নায়িকা হও তাহলে আমার হাতের তালুতে চুল গজাবেএই ঘটনার অনেকদিন পার হয়ে গেছেতখন সিঁথির মোড়ের ন্যাশনাল সাউন্ড স্টুডিওতে নীরেন লাহিড়ি টেনিস খেলছেন, আর সুচিত্রা সেন তখন স্টার! সুচিত্রা সেন ওঁকে গিয়ে বলেছিলেন, ‘কই আপনার হাত দেখি, দেখিই না’! নীরেনবাবু তো চমকে গিয়ে বলেছিলেন, ‘কেন? কেন রমা?’ সুচিত্রা সেন-এর সাফ জবাব 'আমি তো নায়িকা হয়ে গেছি! আপনার তো হাতে চুল গজায়নি'! বলে এক মুহূর্ত সেখানে না দাঁড়িয়ে উনি বেরিয়ে গিয়েছিলেনউনি ঠিক কথাটা মজা করে বলে দিতে পারতেনকিন্তু সবটাই কি মজা? লোকে বলে সেটা মজা ছিলমুনমুন-ও খুব মায়ের মতো মজা করতে পারেএই হিউমারটা আমার মনে হয় ওর সুচিত্রা সেন-এর থেকে পাওয়াতবে মিসেস সেন-এর মজাটা আমরা দেখতে পাইনি মিস করেছি



শৈলেনদার কাছেই শোনা সুচিত্রা সেন একবার শিম্পাঞ্জি পুষলেনকিছুদিন পোষার পরে উনি সেটা শৈলেনবাবুকে দিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেনসেই শিম্পাঞ্জি সিগারেট, চা সব খেতভাবুন! আমরা পুষলে কি পুষব? পাখি, কুকুর, বেড়ালউনি পুষলেন শিম্পাঞ্জি! সবটাই ওঁর অন্যরকম

উত্তমবাবুর কাছে শুনেছি, ওঁদের মধ্যে শ্রদ্ধার সম্পর্ক ছিলদুজনে অসম্ভব বন্ধু ছিলেনআর এই বন্ধুতার মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিলপ্রেম ছিল না কিন্তু! ওঁরা প্রেমিক-প্রেমিকা ছিলেন নাঅধিকাংশ মানুষের ধারণা ওঁদের অভিনয়টাই আসলে প্রেম ছিলতা কিন্তু নয়, তাহলে তো যে মার্ডারারের চরিত্র করে তাকেও তো মার্ডার করতে হবেকিন্তু উত্তম সুচিত্রার বাংলা ছবিতে কোনও বিছানার দৃশ্য, গভীর চুম্বনের দৃশ্য, কিছু কি ছিল? ছিল না! এসবের তো দরকারও পড়েনি কখনওঅথচ আজ এবং আজীবন বাঙালির সেরা রোম্যান্সের জুটি বললে উত্তম-সুচিত্রার ছবিই ভেসে ওঠেসুচিত্রা সেন-এর একটা স্টাইল ছিলযে চরিত্রই করুন না কেন সবসময় মনে আসে আমাদের উনি সুচিত্রা সেন, চরিত্রটার কথা কিন্তু মনে আসে নাএটাই ম্যাজিকএমনও হয়েছে উত্তমবাবুর মুখে শুনেছি, সুচিত্রা সেন উত্তমকুমারকে বলছেন 'আমি কিন্তু এত টাকা চাইব আর তুইও বাড়িয়ে এত টাকা বলবি'– কখনও তুমি, কখনও তুই করে বলতেন, এতটাই বন্ধুতা ছিলআর দর্শক হিসেবে আমরা সক্কলে ভাবতাম উত্তম সুচিত্রার যদি বিয়ে হত! লোকে অবশ্য এটাও বলে যে ওঁদের বিয়ে হলে বিয়েটা টিঁকত না! 



কারণ দুজনেই খুব ডমিনেটিং ছিলেনএটা কিন্তু ঠিক নয়উত্তমকুমার কোনওদিনই ডমিনেটিং ছিলেন নাআসলে অহঙ্কার তো ভয় থেকে আসেসেটা উত্তমকুমারের থাকতে যাবেই বা কেন? ওঁর অহং বোধ ছিলসেটা তো থাকবেই, রবীন্দ্রনাথের কথায় আছে 'অহংবোধ না থাকলে মানুষ শ্যাওলার সমান হয়'কিন্তু সুচিত্রা সেন-এর ক্ষমতা এতটাই ছিল যে, মস্কোয়সাত পাকে বাঁধা’-র জন্যে বেস্ট অ্যাক্ট্রেস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার পরে পার্টিতে,কলকাতায় সুচিত্রা সেন সকলের সামনে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দিয়েছিলেনসেটাও কি কেবল মজাই ছিল? আপনারা এবার ভাবুন... আমি বলব না...

শুনলেন : স্রবন্তী বন্দ্যোপাধ্যায়

Source:


Sunday, April 20, 2014

‘সম্মানিত’ গ্রাহকদের চরম প্রতারিত করলো বাংলালিংক




সম্মানিতগ্রাহকদের চরম প্রতারিত করলো বাংলালিংক
-আশিস বিশ্বাস

Gulshan-2 Circle

বাংলালিংক তার গ্রাহকদের সঙ্গে চরম প্রতারণা করেছেবড় ধরনের একটা পাট’ (ভূমিকা/Role) নিয়েছেসম্মানিত’ ‘প্লাটিনাম’ ‘গোল্ড’, ‘সিলভারগ্রাহকদের অল্পদামে একটি এন্ড্রয়েড ফোন দিতে চেয়েছিলএ জন্য তারা সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপনও দেয়

কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল উল্টোশনিবার দুপুরে গুলশান-২ নম্বর সেকশনের সেলস অ্যান্ড কাস্টমার কেয়ারে গিয়ে দেখা গেল ৫০ থেকে ৬০ জন গ্রাহক ফোনসেট কিনতে গেছেনঅথচ পুলিশ তাদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে নাগেটের কাছে বাংলালিংক কর্মকর্তারা গ্রাহকদের ঠেলে বের করে দিচ্ছেনএই সময় তারা অফিসও বন্ধ করে দেয়

পরে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সবাইকে সরে যেতে বললোনা, গেলে পুলিশ তাদের কাজ করবেএকজন সাব-ইন্সপেক্টর বার বার চিৎকার করে বলতে থাকেন, আপনারা সবাই যে যার কাজে চলে যানএখানে ভিড় করবেন নাপুলিশকে যেন পুলিশের কাজ (তারমানে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল, আটক...আরো কী জানি!) করতে না হয়

তারপর বাধ্য হয়ে সবাই কাস্টমার কেয়ারের সামনে থেকে চলে যানএই সময় অফিসের এক কর্মচারী জানালেন, ১০ কার্টন ফোনসেট আনা হলো, তা গেল কই?

ZTE V807

এরপর রোববার সকাল ১১টায় গুলশান-১ নম্বর সেকশনের মূল অফিসে (টাইগার প্লাজা) গেলে দেখা গেল, অনেক নিরাপত্তা কর্মী ওয়াকিটকি হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছেনকাউকে কাউকে তারা জিজ্ঞাসা করলেন, কেন, কী জন্য এখানে এসেছেনএ সময় ২০/২২ বছর বয়সী এক তরুণ সোফায় এসে বসামাত্রই এক নিরাপত্তা কর্মী তার কাছে জানতে চাইলেন, তিনি কেন এসেছেন? অথচ এর আগে-পরে অন্য কাউকে কিছুই জিজ্ঞাসা করতে দেখা গেল না

এদিকে, শনিবার কেউই কোনো ফোনসেট পাননিতারপর রোববার সকালেই বাংলালিংক কর্তৃপক্ষ এসএমএস করে জানালো- তাদের প্রমোশনাল অফার শেষসহযোগিতার জন্য ধন্যবাদবাংলালিংকের সঙ্গেই থাকুন

এর কিছুক্ষণ পরই ২৫/৩০ তরুণ টাইগার প্লাজার সামনে এসে জড়ো হলেনবোঝা গেল, তারা অফারের জন্য এসেছেনকিন্তু তারা যে আর ফোনসেট পাবেন না, ততক্ষণে আমরা নিশ্চিত হয়ে গেছি, বাংলালিংকের এসএমএস দেখে

এবার বলি, বাংলালিংকের কথিত সম্মানিত’-দের আমিও একজন এবং তাদের মানদণ্ড অনুযায়ী আমি সব্বোর্চ সম্মানিতগ্রাহকতারমানে আমি প্লাটিনামভুক্ত

জানিয়ে রাখি, বাংলালিংক আমাদের (বাংলানিউজ) এসএমএসের গ্রাহক-অংশীদারসেই সঙ্গে আমরা তাদের ব্রেকিং নিউজসার্ভিস প্রোভাইডারওআমাদেরও এ বিষয়ে কৌতূহল তৈরি হলোতখন অফিসিয়ালি ফোনসেট যোগাড় করার চেষ্টা করা হলোবলা হলো, রোববার দেবেরোববার বললো, ফোনসেট নেইউচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করবেন

এবার আমরা নিশ্চিত হলাম, বাংলালিংক তার গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেআসলে তারা পাটনিয়েছে, নিজেদের প্রচারের কৌশল হিসেবেগ্রাহকদের সঙ্গে বাংলালিংকের এ ধরনের প্রতারণা ক্ষুব্ধ করেছে এর গ্রাহকদেরফোনসেট দিতে চেয়ে দেয়নি এই টেলিকম অপারেটরঅনেক গ্রাহক অভিযোগও করেছেন
 
Gulshan-2
তবে গুঞ্জন শোনা গেছে, বাংলালিংকের কর্মচারীরা এই ফোনসেটগুলো বিক্রি দেখিয়ে কালোবাজারি করবে 

তাহলে কি রাজনীতিবিদদের মতো জনগণের নাম ভাঙিয়ে টেলিকম অপারেটররাও প্রতারণা করে!!! (?) তারাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না!!! তবে গ্রাহকরা কিন্তু সহনশীল ছিলেনপেট্রোল বোমা ছুড়ে মারেনি, গাড়ি ভাঙেনিতবে ভবনে ঢিল ছুড়লে, গাড়ি ভাঙলে ফোনসেট পাওয়া যেতো!!! জানতে ইচ্ছে করছে, বাংলালিংক কর্তৃপক্ষের কাছে...!!



আরো পড়ুন: