নির্বাচন কমিশন দৌড়ে প্রথম মন্ত্রিসভা...!!
- আশিস বিশ্বাস
![]() |
| কার্টুন- ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত |
আমাদের নির্বাচন কমিশন (ইসি) আওয়ামী লীগ নেতা আমুর হোসেন আমুর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে!
২২ মার্চ অনুষ্ঠিত 'চতুর্থ পর্যায়ের ভোটের আগে নিজের নির্বাচনী এলাকা ঝালকাঠীর রাজাপুরে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামানকে এক অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেয়ায় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নামে এই নালিশ করে ইসি।' তাও আবার ২৪ মার্চে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকের মাধ্যমে।
এ বিষয়ে ইসি সচিবালয়ের যুগ্মসচিব জেসমিন টুলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'শিল্পমন্ত্রীর আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি স্মরণ
করিয়ে দিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে তা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা
হয়েছে।'
![]() |
| ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক |
নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে মন্ত্রীকে সতর্ক করে
কোনো চিঠি দেয়নি ইসি। কেন দেয়া হয়নি এর উত্তরে জেসমিন টুলী বলেন, 'এই বিষয়ে
ভারপ্রাপ্ত সচিবই (ইসির) ভালো জানেন।'
এটা কেমনতরো কথা! ইসি প্রধানমন্ত্রীর কাছে নালিশ দেবে কেন?
প্রধানমন্ত্রী
কি নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের প্রধান, যে তার কাছে নালিশ দিতে হবে? বরং
প্রধানমন্ত্রী যদি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন,তাহলে তাকেও তো আচরণবিধি লঙ্ঘনে
শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ইসির। এ কেমন কথা ইসির...!!
এতদিন ভাবতাম নির্বাচন কমিশনের মেরুদণ্ড ভাঙা। এখন তো দেখছি, মেরুদণ্ডই
নেই...। দায়িত্ব পালন না করতে পারলে ছেড়ে দাও। তা না যেন, ছোটভাই বড়ভাইয়ের
বিরুদ্ধে নালিশ দিচ্ছে বাবার কাছে...একটি সাংবিধানিক সংস্থার (নির্বাচন
কমিশন) একি দশা...এই নির্বাচন কমিশনার দিয়ে দলীয় কাজ চালানো গেলেও দেশের
জন্য অমঙ্গল।
এই নির্বাচন কমিশনাররা কি ভারতের একসময়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার টি.এন. শেষণের নাম শুনেছে? মনে হয় না। কারণ, তার সময়ে ৯০ দশকের মধ্য সময়ে ভারতের নির্বাচনে সরকারি দল কী বিরোধীদল টি.এন. শেষণের নাম শুনলেই ভয়ে হাঁটু কাঁপতো। কারণ, কোনো দল আচরণবিধি সামান্যতম ভঙ্গ করছে কিনা, তা দেখার জন্য নির্বাচন কমিশনের লোক টিকটিকির মতো পিছু নিতো। সামান্য ত্রুটি পেলেই ঘায়েল করেছে যে কোনো দলের প্রার্থীকেই। শেষমেশ, সরকারি দল ও বিরোধী দল উপায় খুঁজতে থাকলো কী করে শেষণকে সরানো যায়!! কিন্তু পারেনি। কারণ, পদটি সাংবিধানিক। চাইলেই সরানো যায় না।

ওই সময়ের একটা ঘটনা। নির্বাচনের আগে একজন ডিএম (ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রট) অাচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে বিধায় খোদ ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জনসভা পণ্ড করে দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী সে জনসভা আর করতেই পারেননি। তাই বলে ওই ডিএমকে প্রধানমন্ত্রী কিছুই বলতে পারেননি। কারণ, তিনি ফেডারেল সরকারের কর্মচারী ছিলেন।
আর আমাদের দেশে? সব কিছু আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেয় ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক। নিজেদের কিছুই করার নেই তাদের। তাহলে আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়ে পদত্যাগ করা উচিত এদের। মৃত্যু, কেন্দ্র দখল, গুলি, নির্বিকার প্রশাসন এ সবই দেখতে হয়েছে আমাদের নির্বাচন কমিশনের বদৌলতে। সবই যদি আল্লাহ করে দেবে, তাহলে তোরা পদত্যাগ কর। দোষ দেওয়ার সময় আল্লাহর কথা বলে। আর প্রশংসার সময় ইসি...এই হচ্ছে মেরুদণ্ডহীন, বেশরম ও দায়িত্বহীন ইসি আমাদের...!!
না পারলে ক্ষমতা ছাড়...ছেড়ে দিয়ে অন্তত নিজেদের সম্মান বাঁচা...তা না, ধরে জনগণ তুলোধুনো করে বিদায় জানাবে যখন, তখন হয়ত সেই প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর মতোই এরাই আবার হয়ত বলবে- 'আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে,আমাদের কিছু করার ছিল না।'
না পারলে ক্ষমতা ছাড়...ছেড়ে দিয়ে অন্তত নিজেদের সম্মান বাঁচা...তা না, ধরে জনগণ তুলোধুনো করে বিদায় জানাবে যখন, তখন হয়ত সেই প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর মতোই এরাই আবার হয়ত বলবে- 'আল্লাহর মাল আল্লাহ নিয়ে গেছে,আমাদের কিছু করার ছিল না।'

রাজনৈতিক কৌতুকের দেশ বাংলাদেশ...ক্ষমতাসীন ও ক্ষমতার পাশে থাকা ওই গোষ্ঠীর রাজনৈতিক কৌতুক এরশাদ মামুর মতো হাসির খোরাক জোগায়। আবার সেই ভবিষ্যত বাংলাদেশ সম্পর্কে ভাবতে আশঙ্কা ভর করায়।
হায় মুক্তিযুদ্ধ...! হায় বঙ্গবন্ধু...! হায় সোনার বাংলা...! হায় গণতন্ত্র...!! হায় সংবিধান...হায়...!!!


No comments:
Post a Comment